বাজারে যে চাল পাওয়া যায় তার সিংহ ভাগের রঙ সাদা। এ ছাড়াও আরেক রঙের চালের কথা প্রায়শই শোনা যায়, যা বাদামি চাল হিসাবে পরিচিত। ধানের খোসা ছাড়ানোর পর আঁকাড়া চালের ওপর যে অংশুল চাদরগুলো থাকে যেমন অ্যালুইরোন স্তর, সিড-কোট, পেরিকার্প ও জার্ম ধানকলে ছাঁটাই হয়ে যাওয়ার পর যে সাদা রঙের শর্করাসমৃদ্ধ এন্ডোস্পার্ম পড়ে থাকে তাই সাদা চাল। আর বাদামি চাল বলতে বোঝায় ধানকলে খোসা অপসারিত আঁকাড়া চাল। আঁকাড়া চালে উল্লিখিত অ্যালুইরোন, সিড-কোট, পেরিকার্প ও এমব্রায়ো অক্ষুণ্ণ থাকে।

আঁকাড়া চাল থেকে এই অংশুল চাদরগুলি অপসারণের ফলে সাদা চালের গন্ধ গ্রথন বাহ্যিক রূপের পরিবর্তন হয় এবং চালের সংরক্ষণ ক্ষমতা বাড়ে। সাদা চালে পালিশ পড়ে বলে রঙ উজ্জ্বল শুভ্র হয়। আবার এই অংশুল আস্তরণ ও অ্যান্ডোস্পার্ম বাদ যাওয়ার ফলে সাদা চাল থেকে নানা ধরনের ভিটামিন যেমন ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি৩, খনিজ পদার্থ যেমন লোহা, ম্যাঙ্গানিজ, জিঙ্ক, সোডিয়াম ইত্যাদিও বহুলাংশে অপসারিত হয়। ফলে খাদ্যগুণ কমে যায়। অপর পক্ষে বাদামি চালে এই আস্তরণগুলো থাকার ফলে ভিটামিন, ভোজ্য খনিজ পদার্থ ও মূল্যবান স্নেহজাতীয় পদার্থে সমৃদ্ধ হয়।
সাদা চালের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই) বেশি। বাদামি চালের কম। কোনও ভোজ্যের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স সেই ভোজ্য খাওয়ার পর রক্তে শর্করা কত তাড়াতাড়ি কী পরিমাণে জমা হয় তা সূচিত করে। সাদা চালের জিআই বেশি হওয়ার জন্যই মধুমেহ (ডায়াবেটিক) রোগীদের ভাত কম খেতে বলা হয়। অন্য দিকে বাদামি চালের জিআই সূচক কম হওয়ার ফলে তা ভক্ষণ করলে রক্তে শর্করার অনুপ্রবেশ ঘটে ধীর গতিতে। পরন্তু উপকারী স্নেহজাতীয় অম্লের আধিক্য থাকায় বাদামি চাল হৃদরোগীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ্য।